বরিশালের একটি ডাকাতি মামলার আসামি হয়ে দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ডাকাত দলের প্রধান রেজাউল করিম কিছলু। তবে গতকাল বিকেলের দিকে রাজধানীর পল্টন মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এদিকে বুধবার (১০ জুলাই) সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের সিরিয়াস এন্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াড তাকে চিনতে পেরে ধরে ফেলে।

ডাকাত রেজাউল করিম কিছলুকে গ্রেফতার করে সিআইডি জানান, রেজাউল করিম কিছলু কোনো ডাব ব্যবসায়ী নন বরং সে একজন ডাকাত দলের প্রধান। সে বরিশালের একটি ডাকাতি মামলার আসামি। তাকে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ খুজে বেড়াচ্ছিলো, তবে গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছদ্মবেশে ডাব বিক্রি করছিলেন এই ডাকাত দলের প্রধান। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের রহমতপুর এলাকায় কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের ১১ লাখ ৫২ টাকা ডাকাতি করে পালিয়ে যায় কিছলু ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

জানা গেছে, ঘটনার দিন ওই ইনস্টিটিউটে কর্মরত ৩৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর আগস্ট মাসের বেতন তোলার জন্য ইনস্টিটিউটের হিসাবরক্ষক তার অফিস সহকারী ও চালককে সঙ্গে নিয়ে বাবুগঞ্জের ট্রেজারি শাখায় যান। সেখান থেকে ১১ লাখ ৫২ টাকা উত্তলোনের পর প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। রহমতপুরের হার্টিকালচার সেন্টারের উত্তর পাশে জীপটি পৌঁছালে বিপরীত দিক আসা ৩/৪টি মোটরসাইকেল ৫/৬জন হেলমেট ও মুখোশ পরে জীপটির গতি রোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করে জীপের গ্লাস ভেঙে ফেলে। তাদের মধ্যে দু’জন পিস্তল ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কৃুষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বাদি হয়ে বরিশালের এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন।

সিরিয়াস এন্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রাজিব ফারহান বলেন, মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনায় জড়িত রাসেল ও জামাল নামের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে কিছলু, দিপু ও জলিলের নাম বলে। এর মধ্যে কিছলু চক্রের নেতা। ঘটনার পর সে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। এরপর ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন কাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডাব বিক্রি শুরু করে। কিন্তু সিআইডি তদন্ত ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে তাকে বুধবার পল্টন মোড় থেকে গ্রেপ্তার করে।
রাজিব ফারহান আরো জানান, ঘটনায় জড়িত দু’জনের মধ্যে জলিল খুবই ধূর্ত।

এ সময়ে তিনি আরও বলেন, ধূর্ত জলিল ডাকাতি করার ১ সপ্তাহ আগে ভ্রমণ ভিসায় ভারতে চলে যান। তার পর ডাকাতি করার জন্য আবারও ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে ফিরে আসেন তিনি। তার পর একদিন ডাকাতি করে মানুষের সব কিছু লুট করে নিয়ে আবারও অবৈধভাবে ভারতে চলে যান। এর পরে যেটা হলো যে, সে অপরাধ করেও ঘটনার সময় দেখা যায় সে কাগজে কলমে ভারতে অবস্থান করছিল। তবে তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দীপুর বিষয়ে সব রকমের তথ্য সংগ্রহ করার। আমরা আশাবাদী যে তাকে খুব তাড়াতাড়ি গ্রেপ্তার করতে পারবো।